সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ, এক পরিবারের ৪ জন দগ্ধ

 

কেরানীগঞ্জে রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে ধসে গেছে বাড়ির দেয়াল। আজ সোমবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাটুরাইল ঋষিপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে


ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় রান্নাঘরে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে এক পরিবারের ৪ জনসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাটুরাইল ঋষিপাড়া এলাকার চারতলা একটি ভবনের নিচতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে ঘরের দেয়াল ধসে গেছে।


বিস্ফোরণের পর ছড়ানো আগুনে দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন উমা রানী (৬০), তাঁর মেয়ে বিনা চক্রবর্তী (৪০), ছেলে দেবা চক্রবর্তী (২৮) ও নাতি পিনাক চক্রবর্তী (১৫)। এ ছাড়া বিস্ফোরণে দেয়াল ফেটে আহত হয়েছেন প্রতিবেশী লিপি চক্রবর্তী (৩০), তাপস সরকার (৩০), তারা রানী (৩৫), রাখি রানী (৩২), নিঝুম (২৯) ও পথচারী স্বপন রাজবংশী (৫৫)। তাঁদের মধ্যে উমা রানী, বিনা চক্রবর্তী, দেবা চক্রবর্তী ও পিনাক চক্রবর্তীকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় তাঁদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।


আহত ব্যক্তিদের মধ্যে লিপি চক্রবর্তী ও পথচারী স্বপন রাজবংশীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহত ব্যক্তিরা হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।


শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, দগ্ধদের মধ্যে সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক। সবার শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে উমা রানীর শরীরের ৯৫ শতাংশ, বীণা চক্রবর্তীর ৮৫ শতাংশ, পিনাকের ২৪ শতাংশ, ও দেবা চক্রবর্তীর শরীরের ১৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।  



দগ্ধ উমা রানীর নাতি জ্যোতি দাস প্রথম আলোকে বলেন, চারতলা এ ভবনটি তাঁর দাদার। ভবনের নিচতলায় থাকেন দাদি উমা রানী এবং তাঁর ছেলে ও মেয়ের পরিবার। সকালে দাদি রান্নাবান্নার জন্য রান্নাঘরে যান। সেখানে গিয়ে দেশলাই জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। একপর্যায়ে দাউ দাউ করে ঘরে আগুন জ্বলে ওঠে। আগুন রান্নাঘর থেকে অন্য ঘরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে ঘরের দেয়ালও ফেটে যায়। এ সময় তৎক্ষণাৎ দগ্ধদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যান তাঁরা।


অন্যদিকে আহত প্রতিবেশী লিপি চক্রবর্তীর ছোট ভাই সৌরভ আচার্য বলেন, ‘যে বাসার রান্নাঘরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, সেই বাসার পাশে আমার বোন লিপির বাসা। সকালে যখন ওই বাড়িটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তখন সেখানকার দেয়াল ভেঙে ইট উড়ে এসে বোন লিপির মাথায় পড়ে। এতে সে আহত হয়। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিসিন বিভাগে ভর্তি আছে।’


বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হন পথচারী স্বপন রাজবংশী। তিনি পেশায় ঝাল-মুড়ি বিক্রেতা। তিনি বসবাস করেন ওই এলাকাতেই। সকালে তিনি ওই বাড়ির পাশের সড়ক দিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। তখন বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। এ সময় ওই বাড়ির দেয়ালের ইট উড়ে এসে ও শাটার ভেঙে তাঁর মাথায় পড়ে। এতে তিনিও আহত হন।  



দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বিস্ফোরণের ঘটনাটি গ্যাস সিলিন্ডার থেকে ঘটেছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন